সাতক্ষীরা জেলায় চিংড়িচাষের সূচনা |
|
||||||||
বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলের বিস্তৃতি ৪৮০ কিলোমিটার ।বিস্তৃর্ণ উপকূলীয় এলাকার দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা সাতক্ষীরা ।সত্তর দশক থেকে সাতক্ষীরা বাসীর আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তনেরসাথে চিংড়ি সম্পদ বিশেষভাবে জড়িত। বঙ্গোপসাগর থেকে চিংড়ি আহরনের পাশাপাশি সত্তর দশকের শেষ দিকে বাংলাদেশে প্রথম বৃহত্তর খুলনা জেলায় বাগদা চিংড়ি চাষ শুরু হয়।তন্মধ্যে সর্বপ্রথম চিংড়ি চাষ শুরু হয় তত্কালীন বৃহত্তর খুলনা জেলার অন্তর্গত বর্তমান সাতক্ষীরা জেলার সদর, দেবহাটা, কালিগঞ্জ |
|
||||||||
চিংড়ি ঘের |
|||||||||
ও শ্যামনগর থানায় ।তখন দেশীয় (সনাতন) পদ্ধতিতে শুধু বাগদা চিংড়ি চাষ হতো।পরবর্তীতে গলদা চিংড়ির চাষ শুরু হয় নব্বই এর দশক থেকে । |
|||||||||
সাতক্ষীরা জেলায় চাষযোগ্য চিংড়ি প্রজাতি |
|
||||||||
ক) লোনা পানির চিংড়ি |
|
|
|||||||
|
১. বাগদা চিংড়ি(Penaeus monodon) |
|
|||||||
|
২. চাকা চিংড়ি(Penaeus indicus) |
|
|||||||
|
৩. হরিণা চিংড়ি ( Metapeneus monoceros) |
|
|||||||
খ) স্বাদুপানির চিংড়ি |
|
|
|||||||
|
১. গলদা চিংড়ি (Macrobrachium rosenberhii) |
|
|||||||
|
|
|
|||||||
সাতক্ষীরা জেলায় চাষযোগ্য বিভিন্ন চিংড়ির পরিচিতি |
|||||||||
|
|
|
|||||||
ক) লোনা পানির চিংড়ি পরিচিতি |
|
||||||||
|
|
|
|||||||
১. বাগদা চিংড়ি (Penaeus monodon) |
|
||||||||
|
|
|
|||||||
পৃথিবীতে প্রায় ৪৫০ প্রজাতির চিংড়ি পাওয়া যায় । আমাদের দেশে এ পর্যন্ত মোট ৬৩টি প্রজাতির চিংড়ি পাওয়া গেছে । বাংলাদেশে প্রাপ্ত চিংড়ি প্রজাতি সমূহের মধ্য ১৭টি সামুদ্রিক প্রজাতির । লোনা পানিতে চাষযোগ্য নানা ধরণের চিংড়ির মধ্যে বাগদা সবচেয়ে বড় ও সুস্বাদু । শরীরে ডোরাকাটা দাগ থাকায় বাগদা চিংড়িকে Tiger Shirmp বলা হয় , এদের বৃদ্ধির হার খুব দ্রুত এবং স্ত্রী প্রজাতির বাগদা চিংড়ি পুরুষ প্রজাতির বাগদা চিংড়ির চেয়ে বেশি বড় হয় । দশ মাস বয়সে বাগদা চিংড়ি ডিম ছাড়ার উপযোগী হয় এবং ডিম ছাড়ার জন্য এরা গভীর সমুদ্রে চলে যায়। একটি স্ত্রী বাগদা চিংড়ি বছরে ২/৩ বার ডিম পাড়ে এবং ১৫০/২৫০ গ্রাম একটি স্ত্রী চিংড়ি ৩/৭ লক্ষ ডিম দিতে পারে । বাগদা চিংড়ি সবচেয়ে অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পন্ন এবং আমাদের দেশে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে |
|
||||||||
বাগদা চিংড়ি |
|||||||||
|
|||||||||
বাগদা চিংড়ি |
|||||||||
|
|
|
|||||||
২. চাকা চিংড়ি (Penaeus indicus) |
|
||||||||
চাকা চিংড়ি সাদা চিংড়ি হিসেবেও পরিচিত । এ জাতীয় চিংড়ি পানির ব্যাপক লবনাক্ততা ও তাপমাত্রার তারতম্য সহ্য করতে অক্ষম । চাকা চিংড়ির পোনা সুন্দরবনের মোহনা অঞ্চলের খাল, খাড়ি প্রভৃতি এলাকায় প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় । প্রাপ্ত বয়স্ক চাকা চিংড়ি সমুদ্র এবং মোহনায় বসবাস করে ।
|
|
||||||||
চাকা চিংড়ি |
|||||||||
|
|
|
|||||||
৩. হরিণা চিংড়ি ( Metapeneus monoceros) |
|
||||||||
এ জাতীয় চিংড়ির শরীরে ঘন এবং সমভা বিস্তৃত নীলাভ বাদামী রং এর ফোঁটা বিদ্যমান । ফ্লাজিলা ও পায়ে রঙিন ফোঁটা আছে । এ চিংড়ির কেরিনাগুলি হালকা লাল এবং ফ্লাজিলা উজ্জ্বল লাল রঙের হওয়ায় এদেরকে হরিণা চিংড়ি বলা হয় । এ চিংড়ি উপকূলীয় এলাকায় পাওয়া যায় । হরিণা চিংড়ি পানির লবনাক্ততার ব্যাপক তারতম্য হ্রাসবৃদ্ধি সহ্য করতে সক্ষম ।
|
|
||||||||
|
|
হরিণা চিংড়ি |
|||||||
খ) স্বাদুপানির চিংড়ি পরিচিতি |
|
||||||||
১. গলদা চিংড়ি (Macrobrachium rosenberhii) |
|
||||||||
বাংলাদেশে প্রাপ্ত এ পর্যন্ত স্বাদু পানির চিংড়ি প্রজাতি ২৭টি । তারমধ্যে গলদা চিংড়ির ১০টি প্রজাতি সনাক্ত করা হয়েছে । স্বাদু পানির সকল প্রজাতির চিংড়ির মধ্যে গলদা চিংড়ি আকারে সবচেয়ে বড় হয় বিধায় এ চিংড়িকে Gaint Fresh Water Prawn বলা হয় । একটি গলদা চিংড়ি ৫/৬ মাসে পূর্ণ বয়স্ক প্রাপ্ত হয় । গলদা চিংড়ি ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় ও ক্রান্তিয় অঞ্চলের কাছাকাছি বেশি পাওয়া যায় । এ সমস্ত অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলংকা, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, লন্ডন, কম্বোডিয়া, মালেশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন গুরুত্বপূর্ণ । নদী, হ্রদ, হাওর, বাওর, প্লাবন ভূমি, বিল ইত্যাদি জলাশয়ে গলদা চিংড়ির প্রাকৃতিক আবাসস্থল । তবে প্রজনন মৌসুমে প্রাকৃতিক পরিবেশে ডিম ছাড়ার জন্য এরা অল্প লবনাক্ত পানির পরিবেশে অর্থাত.. নদীর মোহনায় চলে যায় । সাধারণত ৭০-১০০ গ্রাম একটি স্ত্রী গলদা চিংড়ি ৭০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ডিম দিতে থাকে । আমাদের দেশে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উত্পাদন করে বানিজ্যিকভাবে গলদা চিংড়ির চাষ করা হয় । স্ত্রী গলদার চেয়ে পুরুষ গলদা বৃদ্ধির হার বেশি । হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানির ক্ষেত্রে গলদা চিংড়ির অবদান শতকরা ২৩% ।
|
|
||||||||
গলদা চিংড়ি |
|||||||||
|
|||||||||
চিংড়ি ঘের |
|||||||||
|
|
|
|||||||
সাতক্ষীরা জেলার গত দশ বছরের চিংড়ি উত্পাদন সংক্রান্ত তথ্য |
|||||||||
|
|
|
|||||||
|
|||||||||
ক্রমিক নং |
উত্পাদন বছর |
ঘেরের আয়তন ও উত্পাদন |
|||||||
|
|
আয়তন (হেক্টর) |
উত্পাদন (মেট্রিক টন) |
||||||
১. |
২০০১ |
২৯৫৪৪.১৬ |
১২৯৪০.৩৪ |
||||||
২. |
২০০২ |
২৯৫৪৪.১৬ |
১৩৫৩১.২৩ |
||||||
৩. |
২০০৩ |
৪৮৩২০.০০ |
১৫০৩৯.১২ |
||||||
৪. |
২০০৪ |
৬২৩৯৯.৭৪ |
১১৬৭২.৫০ |
||||||
৫. |
২০০৫ |
৫২৯২৬.৭৮ |
১৩৩৮৩.০০ |
||||||
৬. |
২০০৬ |
৫৫৯৬৪.০০ |
১৬৬২০.৯১ |
||||||
৭. |
২০০৭ |
৫৯৫৩৭.০০ |
১৫৩৪৪.৭৮ |
||||||
৮. |
২০০৮ |
৬০৭৮৩.৭৩ |
১৭৮৫৭.৩০ |
||||||
৯. |
২০০৯ |
৬৪৫২১.৪০ |
১৪৫১৪.৩৫ |
||||||
|
|
|
|||||||
|
|
|
|||||||
সাতক্ষীরা জেলা হতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চিংড়ি রপ্তানির তথ্য |
|||||||||
|
|
||||||||
ক্রমিক নং |
অর্থ বছর |
হিমায়িত চিংড়ি |
|
||||||
|
|
পরিমান |
মূল্য |
||||||
১ |
১৯৯৮-৯৯ |
৬৬৭১ |
৩৮৩.৫২ |
||||||
২ |
১৯৯৯-০০ |
৯৪০৯ |
৫৩২.০০ |
||||||
৩ |
২০০০-০১ |
৯৮০৫ |
৬২২.০০ |
||||||
৪ |
২০০১-০২ |
৯৯৬৮ |
৪৭৭.০০ |
||||||
৫ |
২০০২-০৩ |
১২১৬৫ |
৫৬৭.৫৬ |
||||||
৬ |
২০০৩-০৪ |
১১৫৯৫ |
৫৮১.০০ |
||||||
৭ |
২০০৪-০৫ |
১২৯০০ |
৬৩২.৫০ |
||||||
৮ |
২০০৫-০৬ |
১৪৭৯৫ |
৮০৯.৪৯ |
||||||
৯ |
২০০৬-০৭ |
১৫৩২৫ |
৯১৭.৪৫ |
||||||
১০ |
২০০৭-০৮ |
১৪৯৭২ |
৮৫৯.১৭ |
||||||
|
|
||||||||
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস